সুন্দরগঞ্জে চার পুলিশ হত্যা পঞ্চম বর্ষপূতি উদযাপন


গাইবান্ধা প্রতিনিধি  :  গাইবান্ধা সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা তদন্ত কেন্দ্রের চার পুলিশ সদস্য হত্যাকান্ডের পঞ্চম বছর পূর্তি গতকাল বুধবার পালিত হয়েছে। ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী মানবতা বিরোধী মামলায় অভিযুক্ত দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর ফাঁসির রায়কে কেন্দ্র করে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা ওই তদন্ত কেন্দ্রে হামলা চালিয়ে তোজাম্মেল হক, হযরত আলী, বাবলু মিয়া ও নাজিম উদ্দিন নামে চার পুলিশ সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা করে।

এই চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার মূল অভিযুক্ত সুন্দরগঞ্জ আসনের জামায়াতের সাবেক এমপি আব্দুল আজিজ ওরফে ঘোড়ামারা আজিজ সহ জামায়াত শিবিরের ৮৯ জনের নাম উল্লেখ করে পুলিশ মামলা করে। এতে অজ্ঞাত পরিচয়ে আরও আড়াই হাজর ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। পুলিশ দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর মামলায় জামায়াত শিবিরের ২৩৫ জন নেতাকর্মী ও সমর্থকদের অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয়।

আদালত সূত্রে জানা যায়, চার পুলিশ হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ২৩৫ জনের মধ্যে ৩ জন নিহত হয়েছেন, ৩ জন পলাতক আছেন এবং আব্দুল মান্নান নামে একজন কারাবন্দি আছেন।বাকী ২২৮ জন জামিনে মুক্ত রয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি (পিপি) শফিকুল ইসলাম জানান, ওই মামলায় ৪ মার্চ চার্জ গঠনের জন্য দিন ধার্য্য করেছে আদালত। সেই মোতাবেক ওই দিন চার্জ গঠনের মধ্য দিয়ে মামলার বিচার কার্য শুরু হবে।

এদিকে বামনডাঙ্গা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ তাজুল ইসলাম জানান, পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালিয়ে আগুন দেওয়াসহ চার পুলিশ সদস্যকে হত্যার ঘটনা ইতিহাসে বিরল। এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় চার্জশিট দেওয়ার পরও এখন পর্যন্ত বিচার শুরু না হওয়ায় নিহত পুলিশ পরিবারের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। দীর্ঘ পাঁচ বছরেও পুলিশ হত্যা মামলা বিচার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় আওয়ামীলীগের সভাপতি শামস উদ্দিন বাবু জানান, জামায়াত শিবিরের ক্যডারদের সেদিনের সশস্ত্র তান্ডবের কথা ভূলে যাওয়ার নয়।আফরোজা বেগম নামে নিহত এক পুলিশ সদস্যের স্ত্রী বিচারের দীঘসূত্রিতার কথা উল্লেখ করে বলেন, তবে আমরা চাই তাড়াহুড়া করে যেন ভুল বিচার না হয়। যারা প্রকৃতপক্ষে এই হত্যাকান্ডে জড়িত ছিল তারাই যেন উপযুক্ত সাজা পায়।

অপরদিকে,জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নিহত চার পুলিশের স্মৃতি স্তম্ভে বিন¤্র শ্রদ্ধা ও পুস্প স্তবক অর্পণ করা হয়।তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে কোরআন খানী ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। পরে নিহত পুলিশ স্মরণে বামনডাঙ্গায় পুলিশ ফাঁড়িতে এক শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়। পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) আব্দুল্লাহ আল ফারুক। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম গোলাম কিবরিয়া, থানা অফিসার ইনচার্জ আতিয়ার রহমান, বামনডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান নজমুল হুদা, কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সভাপতি সমেস উদ্দিন বাবু, সেক্রেটারি আমিনুল ইসলাম প্রমূখ। পরে নিহত চার পুলিশ সদস্যের পরিবারের হাতে শান্তনামূলক উপহার তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ।

শর্টলিংকঃ