গাইবান্ধা প্রতিনিধি : গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারের জমি থেকে সাঁওতালদের উচ্ছেদের ঘটনায় নিহত রমেশ টুডুর মরদেহ মঙ্গলবার সমাধি থেকে উত্তোলন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গোবিন্দগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য ঘটনার ১ বছর ৩ মাস ৫ দিন পর এই মরদেহ উত্তোলন করা হলো।
উপজেলার সাপমারা ইউনিয়নের রামপুরার সিন্টাঝুড়ি গ্রামের রমেশ টুডুর গ্রামের বাড়ির সমাথি স্থল থেকে এই মরদেহ ইত্তোলন করা হয়। এ সময় উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) রাফিউল আলম, পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন মিয়া পিপিএম, স্থানীয় থানার তদন্তকারি কর্মকর্তা নাজমুল আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
বিপিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন জানান, বিগত ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর ইক্ষু খামারের জমি থেকে সাওতালদের উচ্ছেদের ঘটনায় তিন সাওতাল নিহত হন।নিহত তিনজনের মধ্যে শ্যামল হেমরম ও মঙ্গল মার্ডীর মরদেহ ময়না তদন্ত সে সময় সম্পন্ন হয়েছিল। কিন্তু ঘটনার দুই দিন পর ৮ নভেম্বর একটি ধানক্ষেতে রমেশ টুডুর মরদেহ পাওয়া গেলে তার পরিবার মরদেহটি বাড়িতে নিয়ে গিয়ে সমাধি করে। তখন রমেশ টুডুর ময়না তদন্ত হয়নি।
পরবর্তীতে থোমাস হেমরমের দায়ের করা মামলার প্রেক্ষীতে ওই আদালতের বিচারক পার্থ ভদ্র ৩০ জানুয়ারী রমেশ টুডুর মরদেহ উত্তোলন করে ময়না তদন্তের নির্দেশ দেয়। সেই অনুয়ায়ী মরদেহ উত্তোলন করে ময়ন্ততদন্তের জন্য গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
প্রসঙ্গত, ১৯৫৬ সালে উপজেলার মহিমাগঞ্জস্থ্য রংপুর চিনিকলের জন্য সাপমারা ইউনিয়নের সাহেবগঞ্জ এলাকার প্রায় দুই হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করে সরকার। ওই এলাকায় সে সময় ২০ টি গ্রামের মধ্যে ১৫টিতে সাঁওতালদের বসবাস ছিল। বাকী ৫ টি গ্রামে ছিল বাঙ্গালীদের বসবাস। কিন্তু ২০০৪ সালে চিনিকলটি বন্ধ হয়ে গেলে সাঁওতালরা ওই জমিতে ফিরিয়ে আসার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে তারা সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারের ১ হাজার ৮শ ৪০ একর জমির মধ্যে প্রায় দেড় হাজার একর জমি দখলে নিয়ে সেখানে বাড়িঘর গড়ে তোলে। সেখান থেকে সাঁওতালদের উচ্ছেদের উদ্দেশ্যে ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর সাঁওতালদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে রংপুর চিনিকল কর্মকর্তা/কর্মচারী ও পুলিশের বিরুদ্ধে। তবে পুলিশের অভিযোগ সাঁওতালরা তাদের ওপর আক্রমন চালিয়ে।