
আবদুর রাজ্জাক,কক্সবাজার : বান্দরবানের ঘুমধুমের তুমব্রু সীমান্তের নো ম্যান্স ল্যান্ডে আশ্রয় নেয়া অন্তত সাড়ে ৬ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিষয়ে আলোচনা করতে মিয়ানমার গেছে বাংলাদেশের ১২ সদস্যের প্রতিনিধিদল। মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে ঘুমধুমের বাংলাদেশ-মিয়ানমার মৈত্রী সড়ক দিয়ে তারা দেশটিতে প্রবেশ করে।প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো.আব্দুল মান্নান।
অন্যান্য সদস্যরা হলেন-ত্রাণ শরণার্থী ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো.আবুল কালাম, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন, বান্দরবান জেলা প্রশাসক দীলিপ কুমার বনিকসহ বিজিবি ও পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা।প্রতিনিধি দলের সদস্যরা জানান, মিয়ানমার প্রবেশের পর সীমান্তের তাং পাই লুটি এলাকায় দেশটির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বৈঠকে বসেছে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল। বিগত কয়েকদিন ধরে নো ম্যান্স ল্যান্ডে অবস্থানকারীদের সেখান থেকে সরে যেতে মাইকিং করছে মিয়ানমার। তারা এসব অসহায় রোহিঙ্গাদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণও করেছে। এমতাবস্থায় অনেক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের আগস্টের শেষ দিকে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর জাতিগত নিধন চালায়। এ সময় প্রাণ বাঁচাতে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে থাকে। ইতোমধ্যে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারের বিভিন্ন শরণার্থী ক্যাম্পে অবস্থান নিয়েছে।এদের মধ্যে তুমব্রর নো ম্যান্স ল্যান্ডে অবস্থান নিয়েছে অন্তত সাড়ে ৬ হাজার রোহিঙ্গা।এসব রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের সঙ্গে গতবছরের ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশ দ্বি-পাক্ষিক চুক্তি করে বাংলাদেশ। চুক্তিতে দুই মাসের মাথায় প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কোনো রোহিঙ্গা নিজ দেশে ফেরত যেতে পারেননি।
এদিকে, রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধন করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে নতুন-পুরাতন মিলে ১০ লাখ ৬৫ হাজার ৭৩৬ জন রোহিঙ্গার নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে।তুমব্রু সীমান্তে আশ্রয় নেয়া সাড়ে ৬ হাজার রোহিঙ্গাদের দ্রুত ফেরত নিবে মিয়ানমার। আজ মঙ্গলবার মিয়ানমার সীমান্তে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের ১২ সদস্যের প্রতিনিধি দলের প্রধান চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার আবদুল মান্নান।
এদিন বেলা ১১ টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ঘুমধুম সীমান্তের পাশে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ডেকুবনিয়ায় এই মিটিং অনুষ্ঠিত হয়।সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে আরো উপস্থিত ছিলেন রোহিঙ্গা ত্রাণ শরণার্থী ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন, বান্দরবান জেলা প্রশাসক দীলিপ কুমার বনিক, কক্সবাজারের পুলিশ সুপার ড. ইকবাল হোসেনসহ বিজিজি ও পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
