মুক্ত খালেদাকে নিয়েই নির্বাচনে যাবে বিএনপি: ফখরুল

ডেস্ক  রিপোর্ট :  চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্ত করেই তাকে নিয়ে বিএনপি নির্বাচনে যাবে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

খালেদা জিয়াকে ‘গণতন্ত্রের প্রতীক’ অভিহিত করে তিনি বলেছেন, তাকে কারাগারে রেখে বিএনপি নির্বাচনে যাবে বলে যারা ভাবছেন, তারা অলীক স্বর্গে বাস করছেন। ‘দেশনেত্রীকে’ অবশ্যই মুক্তি দিতে হবে এবং মুক্ত ‘দেশনেত্রীকে’ নিয়েই আমরা নির্বাচনে যাবো।

শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় পার্টি (জাফর) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি’ শীর্ষক এ সভায় নেতাদের উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের ঐক্যকে আরো দৃঢ করতে হবে। জনগণ, সংগঠন ও সমস্ত রাজনৈতিক দলের ঐক্য সৃষ্টি করার মধ্যে দিয়ে দূর্বার গণআন্দোলনের মধ্যে দিয়ে এ দানবীর সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনে আনতে আমরা কোন উদ্যোগ গ্রহণ করবো না- নির্বাচনের কমিশনের এ বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, সরকারের যে মূল এজেন্ডা, সরকার যা চাইছে, সেই কথাটা বলেছেন নির্বাচন কমিশন। আপনারা (ইসি) করবেন না, সেটা আমরা জানি। আপনাদের (ইসি) ওখানে বসানো হয়েছে আওয়ামী লীগকে আবার রাষ্ট্রীয ক্ষমতা নিয়ে আসার জন্য। এটা আমরা বলেই যাচ্ছি। এর মধ্যে আমাদের কোন রাগ নেই।

খালেদা জিয়ার সাজা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাটি সম্পূর্ণ জাল নথির উপর প্রতিষ্ঠিত। কারণ তাদের (সরকার) মূল উদ্দেশ্য খালেদা জিয়া, বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখা। যাতে করে তারা আবারও ক্ষমতায় যেতে পারে। এধরনের মামলায় সাজা হওয়ার পরেই জামিন পাওয়া ন্যুনতম নাগরিক অধিকার। সেখানেও তারা হস্তক্ষেপ করেছে। সুতরাং সেই অধিকার থেকে খালেদা জিয়া বঞ্চিত হয়েছেন।

কোথায় গণতন্ত্র- এ প্রশ্ন রেখে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা গণতন্ত্রের কথা বলছি।  কিন্তু সেই কোথায় গণতন্ত্র। অধিকার কোথায়? মানুষের ন্যুনতম যে নাগরাক অধিকার সেটা নেই।

আওয়ামী লীগের ৭ মার্চ পালন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আপনারা (আওয়ামী লীগ) ৭ মার্চ পালন করলেন। খুব ভালো কথা। সরকারি টাকা খরচ করে, বিল বোর্ড লাগিয়ে এবং ঢাকার শহর বন্ধ করে ৭ মার্চ পালন করলেন। তাহলে আমাদের সমাবেশ করতে দিচ্ছেন না কেনো? আমাদের সভাগুলোতে বাধা দিচ্ছেন কেনো? আপনারা বলছেন, শান্তুপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দিবেন না। আমাদের প্রত্যেকটা কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ। কিন্তু প্রত্যেকটা কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছেন। অফিস থেকে বের হতে দেন না। আর বলবেন, আপনারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দেন না। এটা জনগণের সাথে প্রতারণা। কিন্তু প্রতারণা করে বেশী দিন ক্ষমকায় টিকে থাকতে পারবেন না।

সরকার গণতন্ত্রকে ধ্বংস করবার জন্য এসেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, তারা (সরকার) এসেছে মানুষের অধিকার ও আমাদের অর্জনগুলোকে ধ্বংস করবার জন্য। আর সেটা তারা সার্থকভাবে করতে যাচ্ছে।

মির্জা ফখরুল বলেন,  খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে যারা নির্বাচনের কথা ভাববে তারা অলিক স্বর্গে বসবাস করবে। দেশনেত্রীকে অবশ্যই মুক্তি দিতে হবে। দেশনেত্রী নিয়েই আমরা নির্বাচনের সামনে যাবো।

আয়োজক সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ড. টি আই এম ফজলে রাব্বি চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় সংগঠনের মহাসচিব মোস্তাফা জামাল হায়দার, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি অধ্যাপিকা রেহানা প্রধান, ইসলামী ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান এম এ রকিব, ন্যাপের মহাসচিব এম গোলাম মোস্তাফা ভুইয়া প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

শর্টলিংকঃ