বিদিশা সিদ্দিকের সংবাদ সম্মেলনের পাল্টা জবাব

গাইবান্ধা সদর উপজেলার কাবিলের বাজারে ইটভাটায় আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বিদিশা সিদ্দিকের সংবাদ সম্মেলনের জবাবে এক পাল্টা সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে আতিকুর রহমান তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘বিদিশা সিদ্দিক সংবাদ সম্মেলন করে তার বিরুদ্ধে যে তথ্য দিয়েছেন তা সত্য নয়।

বিদিশা সিদ্দিক সংবাদ সম্মেলনে ছয় কোটি টাকা দেওয়ার কথা স্বীকার করলেও তিনি টাকা দিয়েছেন চার কোটি একুশ লাখ। যার ব্যাংক স্টেটমেন্ট সংরক্ষণ করা আছে।

এছাড়া তিনি অপহরণের কথা অস্বীকার করলেও প্রকৃতপক্ষে তাকে অপহরণ করে জোরপূর্বক সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। আমার ভাই, বাবা, ভাটার ম্যানেজারসহ যারাই আমাকে উদ্ধার করতে গেছেন, তাদেরকেই আটক করে এসব অবৈধ চুক্তিপত্রে স্বাক্ষী করা হয়েছে। তাদেরকে জিম্মি করে মিথ্যে স্বাক্ষী নেওয়া হয়েছে বলে তারা ইতিমধ্যে স্বীকারও করেছেন। যার প্রমাণ আদালতে দেওয়া হবে’।

তিনি আরও বলেন, ‘মেডাম টাকা দেওয়ার কথা ছিলো সাড়ে চার কোটি টাকা। কিন্তু তিনি টাকা দিয়েছে পযাক্রমে চার কোটি একুশ লাখ। সেই টাকা বিদিশা সিদ্দিক ইস্টার্ন ব্যাংক ও শাহাজালাল ইসলামি ব্যাংক থেকে আমার ইসলামি ব্যাংকের গাইবান্ধা শাখার অন্জুমানআরা ইন্টারপ্রাইজের একাউন্টে (একাউন্ট নাম্বার ১৮৭২) মোট চার কোটি একুশ লক্ষ টাকা আসে। কিন্তু মেডাম ৬ কোটি টাকা দেওয়ার দাবি করছেন, সেটি অসত্য এবং ভিত্তিহীন। এসবের কোন ব্যাংকি ডকুমেন্টস নেই’।

আমাকে সুকৌশলে ঢাকায় নিয়ে গিয়ে আটকে রেখে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষরসহ অনেকগুলো ফাঁকা স্টাম্পে স্বাক্ষর নিয়েছেন। সেখানে তিনি তার ইচ্ছে মত টাকার অংক বসিয়েছেন, যা ইতিমধ্যে ব্যাংক, আদালত ও তদন্ত কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে। আপনারা শুনে আশ্চর্য হবেন যে, আমার ভাই, বাবা, ভাটার ম্যানেজারসহ যারাই আমাকে উদ্ধার করতে গেছেন, তাদেরকেই আটক করে এসব অবৈধ চুক্তিপত্রে স্বাক্ষী করা হয়েছে। তাদেরকে জিম্মি করে এসব অপকর্মের মিথ্যে স্বাক্ষী নেওয়া হয়েছে বলে তারা ইতিমধ্যে স্বীকারও করেছেন। যার প্রমাণ সংরক্ষিত আছে।

আমার সাথে মেডাম বা মেডামের কোন লোকের কললিষ্ট চেক করলে জানা যাবে, ১ মার্চ থেকে ৭ মার্চ তারিখের মধ্যে কথা হয়েছে কিনা। গাড়ি নিয়ে ভাটায় আসার পর আমাকে গাড়িতে উঠতে বলে। পূর্বের সম্পর্ক থাকার কারণে আমি গাড়িতে উঠি, গাড়িতে ওঠার পর ম্যাডামের লোকজন আমার ফোন দুটি কেড়ে নেয় এবং আমাকে মারধোর করে আমার নাক ফাঠিয়ে দেয়। সোজা ঢাকায় নিয়ে যায়। আমি নামাজ পড়তে চাইলে আমাকে নামাজ পড়তে দেয় না বলে জীবনে অনেক নামাজ পারছিস আর নামাজ পড়তে হবে না ।যতটুকু সময় বাঁচবি কালেমা পড়। আমাকে ১০ দিন গুলশান ১ এর ৪ নাম্বার রোডের ১৭ নম্বার বাসায় দ্বিতীয় তলায় আটকিয়ে রাখে।

এই ১০ দিনের মধ্যে আমার ছোট ভাইকে মেডাম ও মেডামে লোকজন ডেকে নিয়ে ৭ দিন অটিকিয়ে রাখে বারিধারা প্রেসিডেন্ট পার্কের বাসায় । পরে আমার বাবা সহ কিছু লোকজন গেলে ১৫-৩-২০২৩ একই খসড়া সমঝোতা চুক্তি শাহজাদার মাধ্যমে তৈরি করে।সেখানে ম্যাডাম স্বীকার করছে ৪ কোটি ৭১ লাখ ৪৬ হাজার ৫০০বুঝিয়া পেয়েছি। কিন্তু ১৫ তারিখে আমাকে আমার বাবা, ভাটা ম্যানেজার মোকসেদুল ইসলাম প্রতিবেশী মিজানুর ভাইকে আটকে রাখে।১৬ তারিখ বিকেল পাঁচটার সময় আমাকে উদ্ধারকারী শাহজাদা খন্দকার ও আনারুল ইসলাম প্রামানিককে নিয়ে ৪০০ টাকার স্ট্যাম্পে ১৫ তারিখের খসড়াটি প্রিন্ট দিয়ে নিয়ে আসে।

যেখানে টাকা প্রাপ্তি ৩ কোটি ১৪ লক্ষ ৪৬ হাজার ৫০০ টাকা। আমাকে অপহরণ করে ৭ মার্চ থেকে ১৬ মার্চ তারিখ পর্যন্ত আটকে রেখেছিলেন। তার প্রমাণ অডিও রেকর্ডেও আছে। আমি সংবাদ সম্মেলন করেছি এপ্রিল ২০২৩। ম্যাডাম যে চুক্তিপত্রের টাকা দেখিয়েছে সেটা আমাকে অপহরণ করে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করে নেওয়া চুক্তিপত্র। যেটার বিপক্ষে ইতিমধ্যে বিজ্ঞ আদালতে মামলা করেছি।

ম্যাডামের কাছে আমাকে দেওয়া ৪ কোটি ২১ লাখ টাকার উপরে ব্যাংকিং কোন ডকুমেন্ট নেই।আদালতের মাধ্যমে সব প্রমাণিত হবে ।আমার মায়ের কোন চেক তার কাছে কাছে ছিল না। তার কাছে কর্মরত থাকা অবস্থায় ৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা করে ১৮ মাসে ১ কোটি ৫৬ লাখ ৬০ হাজার নগদ দিয়েছি। যার স্বাক্ষী আমি ম্যাডামের নির্দেশে ইসলামি ব্যাংক গুলশান-১ শাখায় ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি জেনারেলের একাউন্টে ২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা পর্যায়ক্রমে পাঠিয়েছি, যার প্রমাণ বিদিশা ফাঊন্ডেশনের সেক্রেটারি জেনারেল কাজি রুবাইয়াত হোসেন অবগত আছেন।

আমার কাছে আছে। উনার বাসা ভাড়া বাবদ টাকা দিয়েছি। বাসা ভাড়া বাবদ গত পাচ বছরে ন্যাশনাল ব্যাংকের ঢাকা আগারগাঁও ব্রাঞ্চে গিতালি বদরুন্নেসার একাউন্টে ২৭ লাখ টাকা পাঠিয়েছি। ম্যাডামের মায়ের কাছে বিকাশের মাধ্যমে পাঁচ বছর ২০ হাজার ৪০০ টাকা করে এ পর্যন্ত ১২ লাখ ২৪ হাজার টাকা দিয়েছি। আবারও ম্যাডাম বিদিশা সিদ্দিকের নতুন নির্দেশে ডাস বাংলা ব্যাংক বনানী শাখায় তার এজাউন্টে আনুমানিক ৬ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে, যেটা অবশ্যই তার ঐ একাউন্টে রয়েছে।

উল্লেখ্র, সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদের সাবেক স্ত্রী বিদিশা সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অপহরণ, নির্যাতন ও সুকৌশলে তুলে নিয়ে গিয়ে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ এনে গাইবান্ধা আমলি আদালতে মামলা দায়ের করেন তার কর্মচারী আতিকুর রহমান। এরই জের ধরে চলে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন।

শর্টলিংকঃ