বিজয়ের গল্প : ১৯৭১ সালের আজকের উত্তাল এই দিনে ঢাকার ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত এক বিশাল জনসভায় মজলুম জননেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ডাকের প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করেন।
‘অনেক হয়েছে আর নয়, তিক্ততা বাড়িয়ে লাভ নেই। লা-কুম দ্বিনিকুম অলইয়া দ্বিন’র মতো অর্থাৎ তোমার ধর্ম তোমার, আমার ধর্ম আমার; পূর্ব বাংলার স্বাধীনতা স্বীকার করে নাও’ মজলুম জননেতা ভাসানী পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের উদ্দেশে ছুড়ে দেন তার এই তীক্ষ্ণ বক্তৃতা।
৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণের পরপরই, যখন প্রধান দুই নেতা একসাথে একই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে ঐক্যমত প্রকাশ করেন তখন স্বাধীনতার ক্ষেত্রে আর কোনো সন্দেহের অবকাশ থাকে না।
সেদিন জনসভায় তুমুল করতালির মধ্যে মাওলানা ভাসানী বলেন, ‘মুজিবের নির্দেশ মতো আগামী ২৫ তারিখের মধ্যে কিছু না হলে আমি শেখ মুজিবের সাথে মিলে ১৯৫২ সালের মতো তুমুল আন্দোলন গড়ে তুলবো।’ মাওলানা ভাসানী এই বক্তব্যের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পরিচালিত স্বাধীনতা সংগ্রামের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করলেন।
আপামর জনসাধারণের দুই নেতা যখন এইভাবে একাত্মতা ঘোষণা করেন, তখন ঘরে ঘরে মানুষ যুদ্ধের প্রস্তুতির সাথে স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নও দেখতে থাকে। ‘সাড়ে সাত কোটি বাঙালির মুক্তি ও স্বাধীনতার সংগ্রামকে কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না’—এই কথাগুলো ছিল দূরদর্শী মাওলানা ভাসানীর।