পাবনার মাঠ জুড়ে এখন বোরো ধানের সবুজের সমারোহ

পাবনার মাঠ জুড়ে এখন বোরো ধানের সবুজের সমারোহ

পাবনা: শস্য শ্যামলা সবুজ বাংলার কৃষি ভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত উত্তরাঞ্চলের একটি জেলা পাবনা। সেখানের বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ চলতি ইরি-বোরো মওসুমে চাষাবাদকৃত ধানের ক্ষেত এখন গাঢ় সবুজে পরিণত হয়েছে। দিগন্ত জুড়ে নজর কাড়ছে বোরো ফসলের ক্ষেত। ইরি-বোরো ধানের সবুজ পাতা দোল খাচ্ছে।

কৃষকরা ইতোমধ্যে ক্ষেত পরিচর্যা শেষ করে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় সার-কীটনাশক প্রয়োগ অব্যাহত রেখেছে।

জেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, আবহাওয়ার অনুকূল থাকলে এবারে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। ইতোমধ্যে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের অধিক ফলন উৎপাদন লক্ষ্যে  বোরো ক্ষেতে পার্সিং স্থাপন করাসহ নানা পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। গত দু’বছর ধানের দাম ভালো পাওয়ায় কৃষক বোরো ধান চাষে ঝুঁকেছে। দিগন্ত বিস্তৃত মাঠ জুড়ে এখন বোরো ধানের সবুজের সমারোহ।

কৃষি অধিদফতর জানিয়েছে, এবার পাবনা জেলায় ১ লাখ ৯৮ হাজার ১২৯ মে. টন বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যে জেলার ৯টি উপজেলায় ৫০ হাজার ৩৭২ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা  হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৭ হাজার ৫২৫ হেক্টর, আটঘরিয়ায় ৫ হাজার ১শ’, ঈশ্বরদীতে ২ হাজার ৭৪ হেক্টর, চাটমোহরে ৮ হাজার ৫১০ হেক্টর, ভাঙ্গুরায় ৬ হাজার ২২০ হেক্টর, ফরিদপুরে ৬ হাজার ৩২৫ হেক্টর,সাঁথিয়ায় ৬ হাজার ৯৮৫ হেক্টর এবং সুজানগর উপজেলায় ৩ হাজার ২৮৫ হেক্টর জমিতে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

পাবনা সদর উপজেলার নারায়নপুর গ্রামের কৃষক জহুরুল ও নাজির উদ্দিন জানান, আবহাওয়া অনুকূল বা কোন প্রাকৃকিত দুর্যোগ না ঘটলে গত বছরের তুলনায় এবার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।

পাবনা সদর উপজেলার মাহমুদপুর গ্রামের কয়েকজন চাষী জানান, বাজারে বর্তমানে মোটা ধানের দাম এক হাজার ৫০ টাকা। এতে চাষীরা ধানচাষে অধিক মাত্রায় ঝুঁকেছে। বর্তমানে ধানের অবস্থা ভালো। বাজারে সারের অভাব নেই। ভয় শুধু শিলা বৃষ্টি ও ঝড়ের। সদর উপজেলার নারায়নপুর গ্রামের চাষি মো. জহুরুল ইসলাম জানান, তিনি এবার ৩ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছেন। ধানের অবস্থা ভালো। পোকা মাকড়ের আক্রমণ এখন পর্যন্ত নেই।

কৃষি বিভাগের উপ সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মোঃ ওমর আলী জানান, আগে ধানের দাম কম থাকায় চাষিরা  ধান চাষ কমিয়ে দিয়ে অন্য ফসল চাষে ঝুঁকেছিলো। গত দু’বছর ধরে ধানের দাম ভাল হওয়ায় চাষী ধান চাষ বাড়িয়ে দিয়েছে। এ ছাড়াও এবার বৈরী আবহাওয়ার কারণে মসুরসহ কয়েকটি রবিশস্য চাষ ব্যাহত হয়। সেসব জমিতে চাষীরা বোরো চাষ করেছে।

পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক বিভূতি ভূষণ সরকার বলেন, ধানের দাম বেড়ে যাওয়ায় ধান চাষে চাষির লাভ হচ্ছে। যে কারণে ধান চাষ বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে ভালো ফলন আশা করা যাচ্ছে।

শর্টলিংকঃ