খুলনা : গর্ভধারিনী মা এবং বুকে আলগে রাখা বাবা বুকফাটা কান্না, আর্তনাদ আর অশ্রু সজল নয়নে বিদায় দিলেন তাদের নাড়ি ছেড়াধন নেপাল ট্রাজেডিতে নিহত আলিফুজ্জামান আলিফকে। শুক্রবার জুম্মার পর খুলনার রূপসা উপজেলার বেলফুলিয়া ইসলামিয়া হাইস্কুল মাঠে জানাজা শেষে রাজাপুর মাদরাসা গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এ সময় ভাই-বোন, বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনদের কান্নায় আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে ওঠে।
এর আগে শুক্রবার ভোর পৌনে ৫টায় খুলনার রূপসা উপজেলার আইচগাতি গ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছায় আলিফের মরদেহ।
আলিফের জানাজা নামাজে মানুষের ঢল নামে। রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, প্রশাসনের কর্মকর্তা, আত্মীয়-স্বজন, শুভাকাঙ্খী, প্রতিবেশীসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ জানাজায় অংশ নেন। উপস্থিত ছিলেন খুলনা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশিদ, খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) মেয়র মনিরুজ্জামান মনি, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তারুজ্জামান বাবু, খুলনা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আরাফাত হোসেন পল্টু, বর্তমান সভাপতি পারভেজ হাওলাদার, সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন প্রমুখ।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা ৫৫ মিনিটে আলিফুজ্জামানসহ নেপাল ট্রাজেডিতে নিহত তিনজনের মরদেহবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারল্যাইন্সের বিজি-০৭২ নামে একটি ফ্লাইট শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে। পরে বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে আলিফুজ্জামানের বড় ভাই আশিকুর রহমান হামিম ও তার স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী শাহজাহান কামাল।
সন্ধ্যায় রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে আলিফুজ্জামানের জানাজা নামাজ শেষে খুলনার উদ্দেশে মাওয়া ঘাট হয়ে রওনা দেয় মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স। শুক্রবার ভোরে কফিন তার বাড়িতে এসে পৌঁছে। মরদেহ বাহী অ্যাম্বুলেন্স তার নিজ বাড়ীতে পৌঁছালে সেখানে স্বজনসহ শত শত মানুষ তাকে দেখার জন্য ছুটে আছেন।
বঙ্গবন্ধু ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন আলিফুজ্জামান। খুলনার সরকারি বিএল কলেজ থেকে এবার মাস্টার্স পরীক্ষা দিচ্ছিলেন তিনি। ৩ ভাইয়ের মধ্যে আলিফুজ্জামান ছিলেন মেঝ। তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা মোল্লা আসাদুজ্জামান।
উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ ইউএস-বাংলার বিএস ২১১ ফ্লাইট’র একটি বিমান নেপালের ত্রি-ভুবন বিমান বন্দরের অদূরে বিধ্বস্থ হলে আলিফুজ্জামানসহ ২৬ বাংলাদেশি, ২২ নেপালি ও ১ চীনা নাগরিক নিহত হন।