
নারী ও শিশু ডেস্ক: হরমোন চোখে দেখা যায় না। তাই এর ভারসাম্য কতটা বজায় থাকে তা বোঝা খুব মুশকিল। বিভিন্ন কারণে হরমোনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। অবশ্য কয়েকটি লক্ষণে ভাল ভাবে শরীরে হরমোনের গতি-প্রকৃতি বোঝা সম্ভব। কারণ হরমোনের গণ্ডগোল হলেই দেখা দেয় বিভিন্ন রোগের উপসর্গ।
প্রতি মাসেরই একটি নির্দিষ্ট সময়ে নারীদের শরীরে হরমোনের কার্যকলাপ বেড়ে যায়। এ সময় হরমোন তাদের শারীরিক এবং মানসিক অবস্থার ওপর বেশ বড় প্রভাব রাখে। পিরিয়ডের পর শরীর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এলেও মাঝে মাঝে দেখা যায় অকারণেই অনেক দিন ধরে রয়ে গেছে এসব উপসর্গ। শরীরে হরমোনের ভারসাম্য এভাবে ব্যহত হবার পেছনে থাকতে পারে গুরুতর কোনো শারীরিক সমস্যা। বিশেষ করে এই কয়েকটি লক্ষণ দেখতে পেলে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়াই ভাল-
অবসাদ
অবসাদের অনেক অনেক কারণ থাকতে পারে। শুধুমাত্র ক্লান্তি মনে করে একে উড়িয়ে দেন অনেকেই। সারা সপ্তাহ কাজ বা পড়াশোনার ধকলের পর ক্লান্ত থাকাটা স্বাভাবিক। কিন্তু সারাক্ষণই ক্লান্ত থাকা এবং তার পাশাপাশি ওজন বেড়ে যাওয়া, রুচির পরিবর্তন এবং বদহজমের উপসর্গ থাকলে তা হতে পারে আন্ডারঅ্যাকটিভ থাইরয়েডের লক্ষণ। কোনো কারণ ছাড়াই সবসময় ক্লান্ত লাগলে ডাক্তারকে জানান।
ত্বকের অবনতি
ত্বকে ব্রণ ওঠার ব্যাপারটাকে অনেকেই হেলাফেলা করেন। কিন্তু প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মুখের নিচের অংশে ব্রণ ওঠার সাথে শরীরে অধিক মাত্রার টেস্টোস্টেরনের কারণ হতে পারে।
শরীরের গোপনাঙ্গে হঠাৎ করে লোম জন্মাতে শুরু করতে পারে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বেশি হওয়ার কারণে। আর টেস্টোস্টেরন বেড়ে যাওয়ার কারণ হতে পারে শরীরে এক ধরণের টিউমারের উপস্থিতির কারণে।
অনিয়মিত পিরিয়ড
অবসাদের মতই অনিয়মিত পিরিয়ডের পেছনেও থাকতে পারে অনেক কারণ। যেমন স্ট্রেস, থাইরয়েডের সমস্যা, ইস্ট্রোজেনের অভাব অথবা পি সি ও এস (পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম)। পিসিওএস এর লক্ষণ হলো অনিয়মিত পিরিয়ড, অনিয়ন্ত্রিত ওজন বাড়া অথবা শরীরে লোমের আধিক্য। তবে পিরিয়ড অনিয়মিত হবার পেছনে এটাই কি কারণ কিনা তা জেনে নিতে হবে, এরপর বিভিন্ন ধরণের চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে এর প্রতিকার করা সম্ভব।
ঘুমের মাঝে ঘেমে যাওয়া
অনেকেই এমন আছেন, যারা ঘুমের মধ্যেই ঘেমে যান। বেডরুমে ইলেক্ট্রিসিটি থাকা সত্ত্বেও ঘেমে যাওয়া মানে, হতে পারে ইস্ট্রোজেনের অভাব এবং অনিয়মিত ডিম্বপাত। এই জটিলতাকে বলা হয় প্রি মেনোপজ। মেনোপজ হবার মতো বয়স হবার আরও বছর দশেক আগেই দেখা দিতে পারে প্রি মেনোপজ। এসব উপসর্গ দেখা দিলে ডাক্তার দেখিয়ে নিশ্চিত হয়ে নিন সমস্যাটি আরও গুরুতর কি না।