দীর্ঘমেয়াদী কারাবন্দী হতে পারেন খালেদা জিয়া

 


ডেক্স রিপোর্ট : বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে পুরনো একটি মামলায় গ্রেফতার দেখানোর পর তিনি দীর্ঘমেয়াদে কারাবন্দী হতে পারেন বলে আশংকা করছেন দলটির নেতারা। খালেদা জিয়াকে গত সপ্তাহে একটি দুর্নীতির মামলায় আদালত দোষী হিসেবে সাজা দেয়ার পর তিনি এখন ঢাকা কে›ন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী।

তার আইনজীবীরা এই রায়ের বিরুদ্ধে একটি আপিল মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কিন্তু রায়ের সত্যায়িত কপি এখনো পর্যন্ত না পাওয়ায় আপিল আবেদন নিয়ে এখনো বেশিদূর অগ্রসর হতে পারেন নি। কিন্তু এরই মধ্যে তিন বছরেরও বেশি সময়ে পুরোনো কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের একটি নাশকতার মামলায় বিএনপি নেত্রীকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তার পক্ষের অন্যতম আইনজীবি মাসুদ আহমেদ তালুকদার জানিয়েছেন, নাশকতার মামলাটির গ্রেফতারি পরোয়ানা এখন কারাগারে পাঠিয়ে খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

বিবিসি বাংলার খবরে বলা হয়, ২০১৫ সালের শুরুতে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের টানা ৯০ দিনের অবরোধের সময় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে একটি যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোল বোমা হামলায় আটজন নিহত এবং অনেক মানুষ অগ্নিদগ্ধ হয়েছিল। সেই নাশকতার মামলায় গোয়েন্দা পুলিশ চার্জশিট দিয়েছিল গত নভেম্বরে। তাতে খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামী করে মোট ৭৭জনকে আসামী করা হয়েছিল। সেখানকার আদালত চার্জশীট গ্রহণ করে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল।

মামলাটির তদন্তকারি এবং ডিবি পুলিশের কর্মকর্তা ফিরোজ হোসেন বলেছেন, আইন অনুযায়ী অভিযুক্ত গ্রেফতার হলে গ্রেফতারী পরোয়ানা সংশ্লিষ্ট কারাগারে পাঠিয়ে তা যুক্ত করা হয়। বিএনপি নেত্রীর দুর্নীতির মামলার সাজার রায়ের বিরুদ্ধে তার আইনজীবীরা আপিল করার প্রস্তুতি শেষ করে রেখেছেন। রায়েরর সার্টিফাইড কপি ছাড়া সেই আবেদন তারা করতে পারেছেন না। তাঁরা আজ মঙ্গলবার সার্টিফাইড কপি পাওয়ার আশা করছেন।

 

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৫ টি দুর্নীতির এবং ১১টি নাশকতার মামলাসহ মোট ৩১টি মামলা আছে। এর মধ্যে নাশকতার চারটি মামলায় কুমিল্লাসহ বিভিন্ন জায়গায় গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি রয়েছে। তার অন্যতম আইনজীবি এবং বিএনপির সিনিয়র নেতা মওদুদ আহমেদ বলছিলেন, তাদের নেত্রী কারাবাস দীর্ঘায়ায়িত করতে সরকার এখন নাশকতার মামলাগুলোতেও গ্রেফতার দেখাচ্ছে।

নাশকতার মামলায় শোন অ্যারেস্ট দেখাচ্ছে। যাতে তার কারাবাস কয়েকদিন দীর্ঘ করা যায়। এটা সরকার তাদের রাজনৈতিক কৌশল থেকে করছে। তবে এসব অভিযোগ মানতে রাজী নন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। তিনি বলেছেন, আইন অনুযায়ী বিষয়গুলো এগুচ্ছে। খালেদা জিয়া সুনির্দিষ্ট মামলায় সাজা পেয়ে জেলে গেছেন এবং অন্যান্য আরও কিছু সুনির্দিষ্ট মামলায় তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু হয়ে আছে। আমাদের কোন ইচ্ছাই নেই যে আমরা বিএনপি চেয়ারপারসন কিংবা একাধিকবার তিনি প্রাইম মিনিস্টার ছিলেন, তাঁকে রাজনৈতিক ভাবে হেয় করার জন্য আমরা জেলখানায় নিয়ে যাব। এরকম কোন অভিপ্রায় আমাদের নেই। আদালত থেকে যে সিদ্ধান্ত হচ্ছে, আমরা সেই সিদ্ধান্ত শুধু অনুসরণ করছি।

এদিকে, বিএনপি তাদের নেত্রীর মুক্তির দাবিতে রাজনৈতিক কর্মসূচিও অব্যাহত রেখেছে। সোমবার ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির নেতা কর্মিরা মানববন্ধন করেছে। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকেও তাদের মানববন্ধন করার খবর পাওয়া গেছে ।

শর্টলিংকঃ