নওগাঁর রাণীনগরে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) মাসিক কর্মসূচির পণ্য বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এই উর্দ্ধমুখি বাজার দরের যাতাকলে বছর জুড়ে টিসিবি পণ্যে অনেকটাই স্বস্তি ফিরেছে মধ্যবিত্ত, নিম্ম মধ্যবিত্ত ও নিম্ম আয়ের কার্ডধারী পরিবারগুলোর মানুষের মাঝে।
বিশেষ করে রমযান মাসে দুইবার অতি প্রয়োজনীয় পণ্যগুলো স্বল্পমূল্যে পেয়ে বেজায় খুশি উপজেলার সুবিধাভোগীরা। সারা দেশের মতো বরিবার ও সোমবার উপজেলাতেও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে সুষ্ঠ ও সুন্দর পরিবেশে টিসিবি পণ্য বিক্রি কার্যক্রম শুরু করেছে নিয়োজিত ডিলাররা। এই টিসিবি পণ্য নিতে সকল শ্রেণির সুবিধাভোগীদের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে অপেক্ষা করতেও দেখা গেছে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের ১০হাজার ৭৪০টি পরিবার এই টিসিবির সুবিধা পাচ্ছে। যার মধ্যে সদর ইউনিয়নের ১ হাজার ৫শত পরিবার এই সুবিধা পাচ্ছে। প্রতিটি ইউনিয়নে বিভিন্ন তারিখে এই পণ্যগুলো বিতরণ করা হচ্ছে। রমযান মাসে নির্দিষ্ট কার্ডের বিপরীতে ভর্তুকি মূল্যে প্রতিটি প্যাকেজ মূল্য ৪৭০ টাকা। প্রতি প্যাকেজে চিনি ১ কেজি ৬০ টাকা, ছোলা ১ কেজি ৫০ টাকা, সয়াবিন তেল ২লিটার ২২০ টাকা ও মশুর ডাল ২ কেজি ১৪০ টাকার বিনিময়ে প্রদান করা হচ্ছে যা একটি পরিবারের জন্য প্রায় এক মাসের চাহিদা পূরণ করবে। কিন্তু রমজান মাসের জন্য আগামী সপ্তাহে একই টিসিবি পণ্য সুবিধাভোগীরা আরেকবার পাবেন। যার ফলে সুবিধাভোগী প্রতিটি পরিবারকে আর এই রমযান মাসে এই পণ্যগুলো কিনতে হবে না। দেশের সাধারণ মানুষদের কথা চিন্তা করেই সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি মূল্যে এই পণ্যগুলো দিয়ে আসছে। আগামীতেও এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
সুবিধাভোগী উপজেলার সিম্বা গ্রামের মন্টু, খট্টেশ্বর গ্রামের আব্দুল আলীমসহ অনেকেই স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলে বলেন সবকিছুর দাম প্রতিদিন বৃদ্ধি পেলেও আমাদের আয় বৃদ্ধি পায়নি। যার ফলে পরিবারের চাহিদা মাফিক বাজারে গিয়ে পণ্য কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তালিকা ছোট করতে করতে আর ছোট করা যাচ্ছে না। এমন অবস্থাতে সরকারের এই কমদামে পণ্যগুলো পেয়ে অনেক উপকার হচ্ছে। বিশেষ করে রমযান মাসে দুইবার এই পণ্যগুলো পেয়ে অনেকটাই হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। এমন কর্মসূচি চালু করার জন্য ধন্যবাদ জানাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।
সদর ইউনিয়নের টিসিবির ডিলার মেসার্স আব্দুর রাজ্জাক এন্ড সন্সের স্বত্তাধিকারী আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা বলেন প্রতি বারের মতো এবারো সুষ্ঠ ও সুন্দর পরিবেশে সরকারের নিয়ম মাফিক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে পণ্যগুলো বিতরণ করছি। বিতরণ শেষে যদি কিছু পণ্য অবশিষ্ট থেকে যায় তাহলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্যারের পরামর্শ অনুসারে সেগুলো পরিবর্তিতে বিতরণ করা হয়। সরকারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য শতভাগ সফল করতে আমি সব সময় প্রকৃত কার্ডধারীদের মাঝে পণ্যগুলো পৌছে দিতে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেইন বলেন, ট্যাগ কর্মকর্তা ও স্ব স্ব ইউনিয়নের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কঠোর নজরদারীর মাধ্যমে এই পণ্যগুলো বিতরণ করা হচ্ছে। আমি শতভাগ আশাবাদি প্রত্যক ডিলারই নিয়মের মধ্যে থেকেই তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। যদি কোন স্থানে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে ওই ডিলারের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া সময় পেলেই আমি নিজেও অনেক স্থানে উপস্থিত থেকে এই পণ্যগুলো বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করার চেস্টা করে আসছি।