কৃষি ও খাদ্য ডেস্ক: কিছুদিন আগেও একটা লাউ বিক্রি হত ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। এখন তা বাড়ি বাড়ি বিক্রি হচ্ছে পাঁচ থেকে দশ টাকায়। শুধু লাউ নয়, টমেটো বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি দুই টাকা আর বেগুন মাত্র পাঁচ থেকে সাত টাকায়। এমন পরিস্থিতি মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায়।
শুধু যে লাউ, টমেটো কিংবা বেগুনের বাজারের এই বেহাল দশা তা কিন্তু নয়। অন্যান্য শাক–সবজির বাজারও নিম্নমুখী। শিবচরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এই অবস্থার দেখা মিলেছে। এমন পরিস্থিতিতে অঞ্চল ভিত্তিক সংরক্ষণাগার ও প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প স্থাপনের দাবি উঠেছে।
একই অবস্থা মাদারীপুরের বিভিন্ন হাট বাজারগুলোতেও। হাটে এসে পরিবহন ব্যয় না ওঠায় অনেকে মাঠেই রেখে দিচ্ছেন কষ্টার্জিত ফসল।
মাদারীপুরে পদ্মার অংশ আড়িয়াল খাঁসহ নদ–নদী খাল–বিলের কারণে এই অঞ্চলের মাটি পলিসমৃদ্ধ। শিবচরসহ এ সব এলাকায় উন্নত মানের সবজি সারা দেশেরি সমাদৃত। চলতি বছর জেলায় ৭৭০ হেক্টর জমিতে লাউ, ২২০ হেক্টর জমিতে টমেটো, ১২০ হেক্টর জমিতে বেগুনসহ প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে সবজি জাতীয় ফসল আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে শিবচরে ৪০০ হেক্টর জমিতে লাউ, ১০০ হেক্টর জমিতে টমেটো, ৫০ হেক্টর জমিতে বেগুনসহ সবজি জাতীয় ফসল আবাদ করা হয়েছে।
এছাড়া অনেকেই বাড়িতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ফসল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। অনুকুল পরিবেশের ফলে উৎপাদনও হয়েছে বাম্পার। কিন্তু ভাল ও উন্নতমানের ফসল ফলিয়েই কৃষক পড়েছেন চরম বিপাকে।
ওই অঞ্চলে সবজি সংরক্ষণে কোনো সংরক্ষণাগার বা কোল্ড স্টোর না থাকায় পানির দরেই বিক্রি করতে কষ্টার্জিত ফসল। হাট–বাজারেও বিক্রি না হওয়ায় কৃষক ফেরি করে গ্রামে–গ্রামে মহল্লায়–মহল্লায় ঘুরে ফসল বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। অনেকে মাঠেই রেখে দিচ্ছেন টমেটো, লাউ, বেগুন, কপিসহ নানান ফসল।
কৃষকরাও অসহায়। তাদের দাবি অঞ্চল ভিত্তিক সংরক্ষণাগার, সবজি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প স্থাপনের। অনেকের দাবি বিদেশে রপ্তানির ব্যবস্থা করারও। কিন্তু তাদের দাবি আশার আলো দেখেনি। সরকারের দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনা ও নীতিমালার অভাবে প্রতিনিয়ত ভুক্তভোগী হচ্ছেন তারা। তাই ঘাম ঝরানো কষ্টার্জিত ফসল বা সবজি সংরক্ষণের ব্যবস্থা না করা গেলে কৃষি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে কৃষক। তাই সরকারকে কার্যকর ও দীর্ঘস্থায়ী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি তাদের।